ইদানীং যেই সমস্যাটার কথা সবচাইতে বেশি শোনা যায়, তাহলো ঘুম না হওয়া। এর জন্য অবশ্য স্মার্ট ফোন অনেকাংশেই দায়ী। কারও কারও আবার ইনসমনিয়ার সমস্যার কারণে ঘুম হয়না। ঘুম না হলে এর প্রভাব পড়ে পরের দিনের কাজের ওপরে। সারাদিন ক্লান্তিতে চোখ বুজে আসে, কিন্তু তবুও জেগে থাকতে হয়। ঘুম কম হলেও সতেজ থাকার কিছু উপায় আছে। জেনে নিন ঘুম কম হলে কী করবেন সেই সম্পর্কে।
গরম-ঠাণ্ডা গোসল: ঘুম কম হলে শরীর ক্লান্ত লাগে। সকালে উঠেই একটু ভিন্ন পদ্ধতিতে গোসল সেরে নিতে পারেন। একবার গরম পানি এবং আরেকবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে এবং ক্লান্তি কিংবা ঘুম ভাব অনেকটাই কমে যাবে। গোসল করার সময় না পেলে মুখে হিম শীতল পানির ঝাপটা দিন। এতেও ঘুম যাবে।
অক্সিজেন: রাতের ঘুম কম হলে মস্তিষ্ককে সজাগ রাখতে প্রয়োজন বাড়তি অক্সিজেন। বিশেষ ব্যায়ামের মাধ্যমে মস্তিষ্কে বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব। জেনে নিন পদ্ধতিটি।
- মেঝেতে কিংবা যে কোনো সমান্তরালে শুয়ে পরুন।
- এক হাত পাকস্থলী বরাবর রাখুন এবং আরেকটি হাত বুকে রাখুন।
- নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিন এবং পেটে রাখা হাত দিয়ে সেটা অনুভব করার চেষ্টা করুন।
- মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। ছাড়ার সময় পেটে রাখা হাত দিয়ে অনুভব করুন যে পেট ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। পুরো দমটা বের করে দিন।
এভাবে ৫-১০ বার করুন।
সকালের নাস্তায় আইসক্রিম: সকালের নাস্তায় আইসক্রিম রাখুন। অবাক হচ্ছেন? ঘুম কম হলে আইসক্রিম মস্তিষ্ককে সজাগ করতে সহায়তা করে। এর ঠাণ্ডা তাপমাত্রার কারণে ক্লান্তি কমে যায় দ্রুত। তবে এটা যেন নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত না হয় সেই ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে।
চা-কফি বা এনার্জি ড্রিংক নয়: ঘুম কম হলেই সবার সাধারণ একটা অভ্যাস হলো অতিরিক্ত চা-কফি পান করা। অনেকে আবার বাড়তি শক্তি পেতে এনার্জি ড্রিংকও পান করেন। কিন্তু ঘুম কম হলে এধরণের পানীয় পান করলে সাময়িক ভাবে তাজা লাগে ঠিকই, তবে এগুলোর অতিরিক্ত চিনির কারণে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হতে পারে।
সকালের ব্যায়াম: খুব ভারী ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। খুব হালকা কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ কিংবা ৩০ মিনিট হাঁটলেই রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। ফলে রাতে না ঘুমানোর ফলে সৃষ্ট ক্লান্তি ভাব কমে যাবে অনেকটাই।
খোলা আকাশের নিচে যান: রাতে ঘুম না হলে পরের দিন সবচাইতে বেশি কষ্ট হয় কর্মক্ষেত্রে। কাজ করতে বসলেই ঘুম পায়। ঘুম পেলে কিছুক্ষণের জন্য খোলা আকাশের নিচে বের হয়ে পড়ুন। দুপুরের খাবারটা বাইরে খেতে পারেন কিংবা ৫-১০ মিনিট বাইরে থেকে হাঁটাহাঁটি করে আসতে পারেন। এতে ঘুম চলে যাবে এবং সতেজ লাগবে।
কাজের তালিকা তৈরি: ঘুম না হলে অল্প কাজও অনেক বেশি মনে হয়। অনেক কাজ আছে এটা ভেবে কোনো কাজই হয় না। তাই কাজের পরিকল্পনা তৈরি করুন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো তালিকার প্রথম দিকে রাখুন। এতে কাজ গুছিয়ে নেয়া অনেক সহজ হবে।
পর্যাপ্ত আলো: রুমে আলোর স্বল্পতা থাকলে এমনিতেই ঘুম পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই রুমে আলো বাড়িয়ে দিন। সবগুলো লাইট জ্বালিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে প্রাকৃতিক আলো আসার ব্যবস্থা করুন রুমে।
পাওয়ার ন্যাপ: ঘুম লম্বা সময় ঘুমের প্রয়োজন নেই, দিনের মাঝামাঝি যেই সময়টাতে ঘুম পায় তখন অল্প একটু ঘুমিয়ে নিন। ১০-২০ মিনিট ঘুমই যথেষ্ট। এই ধরনের ঘুমকে ‘পাওয়ার ন্যাপ’ বলা হয়। অল্প সময়ের এই ঘুমে আপনি পুরো দিনের কাজের শক্তি ফিরে পাবেন। ব্রাইট সাইড
পাঠকের মতামত